x 
Empty Product

আগেকার দিনে দাদি-নানিরা বাচ্চাদের কাঁচা আম খেতে দিতেন না। কাঁচা আমে নানা ধরনের রোগ হয় এমন ধারণাই সে সময়ে মনে পুষে রাখতেন। দিন পাল্টেছে। এখন কাঁচা আমের জুস, আচার আরও কত কি মানুষ খেতে পছন্দ করেন। কাঁচা আমের গুণাগুণ বিশ্লেষণ করতে গেলে অনেক কথাই বলতে হয়। এই সম্পর্কে জানাচ্ছেন অ্যাপোলো হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ডা. তামান্না।

কাঁচা আমের উপকারিতা

* ভিটামিন সমৃদ্ধ ও মিনারেলে ভরপুর।

* ক্যারোটিন ও ভিটামিনে সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভাল রাখার জন্য দরকার। বিটা ক্যারোটিন থাকায় হৃৎপিন্ডের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

* ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন-২ ভাল পরিমাণে রয়েছে।

* ক্যালসিয়াম ও আয়রন রয়েছে।

* পরিশ্রমী বা নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যেস থাকলে কাঁচা আম খেতে পারেন। পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করতে পারে।

* পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকায় অ্যাসিডিটি বা অম্বল, পেশি সংকোচন, মানসিক চাপের ফলে তৈরি শারীরিক সমস্যায় উপকারী।

* কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় তা অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা সমস্যায় বেশ উপকারী।

রোগ প্রতিরোধ


* ফাইবার বা আঁশ সমৃদ্ধ হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এছাড়া কোলন বা মলাশয়ে ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

* কলেরা, রক্তাল্পতা ও যক্ষা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

* ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে ও গরমের সময় সর্দিগর্মি থেকে রক্ষা করে।

* আমের বীজ শুকিয়ে চূর্ণ করে ডায়রিয়া সারাতে ব্যবহার করা হয়।

* আমের পাতা ব্যবহার করে বহুমূত্ররোগের প্রকোপ কমানো যায়।

* নিফ্রাইটিস বা বৃক্ক প্রদাহ এবং কিডনির সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।

* নিঃশ্বাসের সমস্যা, জ্বরের সমস্যা উপশম করে।

অন্যান্য উপকারিতা

* যথেষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে।

* অ্যালকালাইন জাতীয় খাবার হওয়ায় অ্যাসিডিটি উপশমে ভাল কাজ করে।

* অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় অ্যান্টি-ভাইরাস ও অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান রয়েছে।

* ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আমের পাল্প বা আঁশ সাহায্য করে।

* আম পাতলা করে কেটে ত্বকের ওপর কিছুক্ষণ রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন। রোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা কমে যাবে।

* কাঁচা আম শুকিয়ে তৈরি করা আমচূর গুঁড়া স্কার্ভি সারানোয় কার্যকর। যথেষ্ট পরিমাণে টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল না খাওয়ার ফলে সৃষ্ট রক্তঘটিত রোগই হচ্ছে স্কার্ভি।

* কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। এমনকি পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন সি বেশি পরিমাণে থাকে।

গরমের প্রচন্ড তাপদাহে এক ফালি মিষ্টি আম নিয়ে আসে প্রশান্তি। নানা গুণে নানা জাতে আম হচ্ছে ফলের রাজা। আম আমাদের জাতীয় ফল না হলেও নানা জাতের নানা আকৃতির আম এই দেশেই পাওয়া যায়। বলা হয়ে থাকে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের পুষ্টিগুণ বেশি। তবে পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন পাকা হোক কাঁচা হোক যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন তা আমাদের জন্য উপকারী।বাংলাদেশে সাধারণত এই সময়টাতে কাঁচা আম এ বাজার ভরপুর থাকে। মূলত কাঁচা আম আমের আচার, তরকারিতে টক হিসাবে দেয়ার জন্য কেনা হয়। কাঁচা আমে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। যা ঠান্ডা জাতীয় রোগ প্রতিরোধ করে। কাঁচা আম শরীরের রক্ত পরিস্কার করতে সহায়তা করে।

এক নজরে আমের উপকারিতা:

• আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় অ্যানেমিয়ার সমস্যায় উপকারী
 • ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় কনস্টিপেশন দূর করে
 • কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে
 • শরীরে পটাশিয়ামের অভাব দূর করে
 • শরীরে এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে
 • পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকায় এসিডিটি, মাসল ক্যাম্প, স্ট্রেস ও হার্টের সমস্যায় উপকারী
 • ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে
 • শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল কম রাখতে সাহায্য করে
 • ভিটামিন-সি প্রচুর পরিমাণে থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে
 • গরমের সময় সর্দিতে আম উপকারী
 • হজমের দুর্বলতা কমাতে সহায়ক
 • কিডনির সমস্যায় সাহায্য করে
 • এসিডিটি উপশমে ভালো কাজ করে
 • আম দিয়ে শরবত তৈরি করে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়
 • আম পিপাসা মেটাতে সহায়তা করে।
 • আম লিভার ভালো রাখে।
 • ভিটামিন-সি প্রচুর পরিমাণে থাকায় আম ব্লাড ডিজঅর্ডারের সমস্যাতেও উপকারী।
 • চোখের কর্ণিয়া নরম হয়ে যাওয়া, বিফ্রেকটিভ সমস্যায়ও আম উপকারী।
 • আম যথেষ্ট পরিমাণে খেলে হেলদি এপিথেলিয়াম তৈরি হয়।
 • সাইনাসের সমস্যা অনেকটা কমে যায়।
 • আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে।

আম অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হলেও অতিরিক্ত আম শরীরের জন্য ভালো নয়। গলার সমস্যাসহ অতিরিক্ত আম হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। অনেক সময় কাঁচা আম খাওয়ার সময় আমরা অতিরিক্ত লবণ মরিচ মিশিয়ে খেয়ে থাকি। শরীরের জন্য অতিরিক্ত লবণ ক্ষতিকারক। পরে এই অতিরিক্ত লবণ শরীর থেকে বের করে দিতে বডি সিস্টেম এর ধকল পোহাতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফল খেতে হলে অবশ্যই ধুয়ে পরিষ্কার করে খাবেন। সদ্য কেনা ফল এ ফরমালিন থাকতে পারে। বাজারে পাওয়া বেশিরভাগ পাকা আমেই ফরফামিন থাকে। ফরমালিনযুক্ত আমে মাছি বসে না। আর তা দেখতে পাকা আমের মতন না দেখিয়ে অনেকটা সাদা আবরণের মত দেখায়। অনেক সময় পানিতে ধুলে এই সাদা আবরণের মত উঠে যায়। আমের পুষ্টিগুণ পেতে চাইলে কেমিক্যাল ফরমালিনমুক্ত আম খেতে হবে।